উত্তরপ্রদেশের সম্ভল জেলার হায়াতনগর থানার অন্তর্গত এলাকায় একটি মসজিদ ও একটি মন্দির আংশিকভাবে সরকারি সড়কের উপর গড়ে ওঠায় প্রশাসন এবার কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে। বুধবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় স্থাপনাগুলি পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (PWD)-এর মালিকানাধীন সড়কের উপর নির্মিত হয়েছে। গত বছরের ২৪ নভেম্বর সম্ভলের কোট গারভি এলাকার প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সুরক্ষিত শাহি জামে মসজিদ ঘিরে আদালতের নির্দেশে করা এক জরিপকে কেন্দ্র করে সহিংসতার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেই ঘটনায় চারজন প্রাণ হারান এবং বেশ কয়েকজন আহত হন, যার মধ্যে পুলিশ কর্মীরাও ছিলেন। সম্প্রতি হায়াতনগর এলাকায় করা এক জমি জরিপে উঠে এসেছে, সম্ভল-বেহজোই সড়কের ধারে একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে সরকারি জমিতে। ঠিক বিপরীত পাশে একটি মন্দিরের কিছু অংশ, যার মধ্যে একটি বারান্দার মতো কাঠামো এবং একটি কুয়ো রয়েছে, সেটিও সড়কের উপর অবস্থিত। উপ-বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (SDM) বন্দনা মিশ্র জানান, “জরিপে পরিষ্কারভাবে দেখা গেছে, মসজিদটি সড়কের উপর নির্মিত হয়েছে এবং মন্দিরের কিছু অংশও রাস্তায় বিস্তৃত হয়েছে। এটি PWD-এর জমি। খুব শিগগিরই এই অবৈধ দখল সরানোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে যাতে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে কোনও বিঘ্ন না ঘটে।” তিনি আরও জানান, এই এলাকার আরও কয়েকটি স্থানে জমি ব্যবহারের অনিয়ম ধরা পড়েছে। এক ব্যক্তি উওয়াইস গ্রাম সভার জমিতে বেআইনিভাবে দোকান গড়ে তুলেছিলেন। দোকানটি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাকে ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। আরেকটি ঘটনায়, যেখানে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য নির্ধারিত জমিতে একটি মাদ্রাসা চালানো হচ্ছিল বলে জানা যায়, প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে পুরনো নথিপত্র খতিয়ে দেখছে এবং প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মিশ্রা। স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেছেন, মসজিদ এবং মন্দির দুটি স্থাপনাই গত ২৫-৩০ বছর ধরে ওই এলাকায় রয়েছে। তবে SDM স্পষ্ট করেছেন, “সরকারি পরিকাঠামোর উপর কোনও রকম অবৈধ নির্মাণ, ধর্মীয় হোক বা অন্য কোনও রকম, সহ্য করা হবে না। জনস্বার্থে ও নিরাপত্তার কারণে এই ধরনের বাধা সরানো আবশ্যক।” জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সরকারি জমি পুনরুদ্ধার এবং আইনপ্রয়োগের একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ বলে জানা গেছে।
Facebook Comments Box