উত্তরপ্রদেশের শিকারপুরে এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ইরফানা নকভিকে স্কুল প্রাঙ্গণে ইফতার আয়োজনের অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। ১৭ মার্চ স্কুলে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, স্কুল চত্বরে বেশ কয়েকজন মুসলিম ব্যক্তি ইফতার করছেন। অভিযোগ, প্রধান শিক্ষিকা ইরফানা নকভি উচ্চশিক্ষা দপ্তরের অনুমতি ছাড়াই এই আয়োজন করেছিলেন । ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর, স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ইরফানা নকভিকে বরখাস্ত করে এবং আয়োজকদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। শিকারপুরের সহকারী বেসিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ABSA) আমান গুপ্তা জানান: “সরকারি স্কুল বা প্রতিষ্ঠানে কোনও অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। প্রধান শিক্ষিকা ইরফানা নকভি এই নিয়ম ভেঙে ইফতার আয়োজন করেছেন। তাই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।” এই ঘটনার পর, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সরকারের পদক্ষেপের কঠোর সমালোচনা করেছে। সমাজবাদী পার্টির এক স্থানীয় নেতা মন্তব্য করেছেন: ”উত্তরপ্রদেশে দ্বৈত নীতি স্পষ্ট। যদি ইফতার আয়োজন সত্যিই গুরুতর অপরাধ হয়, তাহলে অন্যান্য ধর্মের অনুষ্ঠানের জন্য কেন একই পদক্ষেপ নেওয়া হয় না?” ইরফানা নকভির বরখাস্তের পরে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অধিকারকর্মী, বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব এবং সাধারণ মানুষ এই সিদ্ধান্তের নিন্দা করেছেন। অনেকে মন্তব্য করেছেন উত্তরপ্রদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন, “একই ধরনের অনুষ্ঠান যদি অন্য ধর্মের হতো, তাহলে কি এমন কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হতো?” তবে, কিছু হিন্দু দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠী এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছে, এবং একে “ন্যায্য পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করেছে। ইফতার আয়োজনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তরপ্রদেশে ধর্মীয় বৈষম্য এবং প্রশাসনিক পক্ষপাতের অভিযোগ নতুন করে উত্থাপিত হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, সব ধর্মের জন্য কি সমান নিয়ম প্রযোজ্য? নাকি একপেশে ব্যবস্থাই বাস্তব চিত্র?
Facebook Comments Box
Tags: Last updated on March 21, 2025
Post navigation
Previous Post
