উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্রা জেলায় রাজন গেহলট নামে এক ব্যক্তি চাঞ্চল্যকর প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত। তিনি আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী, সরকারি কর্মচারী বা ব্যবসার মাধ্যমে ভালো উপার্জনকারী নারীদের লক্ষ্য করে তাঁদের সঙ্গে একাধিকবার বিয়ে করেন। তাঁদের বিশ্বাস অর্জন করে ব্যাঙ্ক ঋণ নেন এবং পরে সমস্ত সম্পর্ক অস্বীকার করে উধাও হয়ে যান। রাজন গেহলট মূলত সিঙ্গেল বা ডিভোর্সি মহিলাদের লক্ষ্য করতেন, বিশেষত যাঁরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী। তিনি কিছু বিয়ে ম্যাট্রিমোনিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেট করতেন। এবং বিয়ের পর তিনি মহিলাদের বিশ্বাস অর্জন করে নানা মিথ্যা অজুহাতে তাঁদের নামে ব্যাঙ্ক ঋণ নিতেন। কখনো বাড়ি কেনার জন্য, কখনো সন্তানের পড়াশোনার খরচের নামে। সন্ত কবীর নগরের এক শিক্ষিকার অভিযোগ, রাজন তাঁকে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে হিন্দু রীতিতে বিয়ে করেন। পরে, তিনি দাবি করেন যে তাঁদের সন্তানের পড়াশোনা ও লখনউতে জমি কেনার জন্য ৪১ লক্ষ টাকার ঋণ দরকার।
শিক্ষিকা তাঁকে বিশ্বাস করে ঋণ নেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই রাজন স্থানান্তরের (ট্রান্সফার) অজুহাতে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। ঘটনাটি সামনে আসে, যখন সন্ত কবীর নগরের ওই শিক্ষিকা থানায় অভিযোগ করেন। এরপর আরও তিনজন মহিলা রবার্টসগঞ্জ থানায় এসে অভিযোগ করেন এবং সবাই রাজনকে তাঁদের স্বামী বলে দাবি করেন। পুলিশি তদন্তে জানা যায়, রাজন কমপক্ষে নয়টি বিয়ে করেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই একই কৌশল ব্যবহার করেছেন। রাজনের বিরুদ্ধে IPC ৪৯৪ (দ্বিতীয়বার বিয়ে থাকা অবস্থায়), ৪২০ (প্রতারণা), ও ৪০৬ (বিশ্বাস ভঙ্গ) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এছাড়া তাঁর নেওয়া ঋণ সংক্রান্ত বিষয়েও তদন্ত চলছে। ব্যাঙ্ক প্রতারণার প্রমাণ পাওয়া গেলে আরও গুরুতর অভিযোগ আনা হবে। এই ঘটনা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছে। ফলে সমাজের দাবি , ম্যাট্রিমোনিয়াল ওয়েবসাইটের ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা প্রয়োজন। নারীদের উচিত বিয়ের আগে পাত্রের অতীত ভালোভাবে যাচাই করা। তদন্তের মাধ্যমে হয়তো আরও অনেক প্রতারিত নারীর তথ্য সামনে আসতে পারে।

Facebook Comments Box
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply