একটি দোকানে অন্য জাতের এক কিশোরকে “বেটা” সম্বোধন করাকে কেন্দ্র করে ভয়ঙ্কর জাতিগত হামলার শিকার হন দলিত যুবক নিলেশ রাঠৌর। ঘটনার ছয় দিন পর, বৃহস্পতিবার (২৩ মে) তাঁর মৃত্যু হয় ভাভনগরের একটি হাসপাতালে। মাত্র ২০ বছর বয়সেই থেমে গেল এক তরুণের জীবন।

১৬ মে, আমরেলি-সাওরকুন্ডলা রোডের পাশে একটি ভাজিয়ার দোকানে ছিলেন নিলেশ রাঠৌর ও তাঁর বন্ধু লালজি মনসুখ চৌহান। রাঠৌর পাশের দোকানে স্ন্যাকস কিনতে গেলে দোকানি ছোথা খোডা ভারত তাঁকে জাতপাতের ইঙ্গিত করে হেনস্থা করেন। পরে চৌহান খোঁজ নিতে গেলে তাকেও লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়।

  • অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ছোথা খোডা ভারত, বিজয় আনন্দ টোটা, ভবেশ ও যতিন মুণঢভা।
  • এদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বহু ধারার পাশাপাশি এসসি/এসটি অ্যাট্রোসিটি আইনে অভিযোগ আনা হয়েছে।
  • বর্তমানে ১১ অভিযুক্তের মধ্যে ৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।

নিলেশের কাকা সুরেশ ভালা প্রতিবাদ জানাতে গেলে দোকানদার আরও লোক জড়ো করে লাঠি, দা ও জাতবৈষম্যমূলক গালাগাল দিয়ে হামলা চালায়। চৌহান, রাঠৌর, ভালা এবং দোকানি জগা দুঢাট পালাতে গিয়েও রক্ষা পাননি। বারবার তাঁদের জাত তুলে অপমান করা হয়।

শুক্রবার নিহতের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভে বসেন কংগ্রেস বিধায়ক জিগনেশ মেভাণী। তিনি বলেন, “গুজরাটে আজও জাতপাতের বিষ এতটাই গভীরে যে, একজন দলিত যুবককে শুধুমাত্র ‘বেটা’ বলার জন্য প্রাণ দিতে হচ্ছে।” তিনি প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্যের শীর্ষ নেতাদের নিরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

  • অমিতা আম্বেদকর বলেন, “আর কতকাল এমনভাবে দলিতরা পিটুনি খাবে?”
  • গিরিজা শঙ্কর পাল প্রশ্ন তোলেন, “‘বেটা’ বলার শাস্তি কি মৃত্যুই?”
    তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “যদি জাতব্যবস্থা আজও বেঁচে থাকে, তবে সংবিধান মৃত।”

নিহত ও আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, সরকারি চাকরি বা জমি প্রদানের দাবি জানানো হয়েছে।

এই ঘটনা আবারও স্পষ্ট করে দিয়েছে—ভারত এখনও জাতপাতের বিষ থেকে মুক্ত নয়। সংবিধান যে সবার জন্য সমান অধিকারের কথা বলে, তার বাস্তবতা আজ প্রশ্নের মুখে।

Facebook Comments Box
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply