জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পাহালগামের বাইসারানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় কমপক্ষে ২৬ জন পর্যটক নিহত এবং ১০ জন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিরোধী দলগুলি কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে “শান্তি ও স্বাভাবিকতা”র ভুয়া প্রচারের অভিযোগে সরব হয়েছে। কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ রাহুল গান্ধী এই ঘটনাকে “অত্যন্ত নিন্দনীয় ও হৃদয়বিদারক” বলে অভিহিত করে বলেন, “সমগ্র দেশ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। কাশ্মীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে সরকার যে দাবি করছে, তা ফাঁপা কথা। সরকারকে এর দায়িত্ব নিতে হবে এবং এমন বর্বরোচিত ঘটনা যেন আর না ঘটে, তার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “পর্যটকদের মৃত্যুর খবরে আমি গভীর শোকপ্রকাশ করছি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।” AIMIM প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এই হামলাকে “গুরুতর নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা ব্যর্থতা” হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, “কাশ্মীরের পাহালগামে ধর্ম জিজ্ঞেস করে পর্যটকদের হত্যা করা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে, সরকারের নিরুত্তর কৌশল ব্যর্থ। অবিলম্বে দায়িত্ব নির্ধারণ ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।” CPI(M) এক বিবৃতিতে জানায়, “এই হামলা মোদি-শাহ জুটির কাশ্মীর নিয়ে ‘সব স্বাভাবিক’ দাবির মুখোশ খুলে দিল। অবিলম্বে রাজ্যের মানুষের সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান খোঁজার জন্য কেন্দ্রকে উদ্যোগ নিতে হবে।” CPI(ML) Liberation সরকারকে আক্রমণ করে বলে, “কাশ্মীরে স্বাভাবিকতার দাবিকে ঘিরে chest-thumping করে যা প্রচার চালানো হয়েছে, তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এই ধরনের সন্ত্রাসবাদী হামলা চলতেই থাকছে—বাসিন্দা, অভিবাসী শ্রমিক এবং এখন পর্যটকরাও এর শিকার।” CPI(ML) আরও আহ্বান জানায়, “এই ট্র্যাজেডিকে ঘিরে জাতীয়তাবাদী বা সাম্প্রদায়িক প্রচার চালানোর চেষ্টা থেকে জনগণকে সচেতন থাকতে হবে। এখন সময় ঐক্যবদ্ধ থাকার, বিভাজনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার।” সপা নেতা অখিলেশ যাদব বলেন, “কাশ্মীরে নিরাপত্তার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা এখন কেন্দ্রের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত। সুরক্ষা থাকলেই সাধারণ মানুষ ও পর্যটকদের মধ্যে আস্থা ও ঐক্যের বোধ জন্মাবে।” পুলিশ জানিয়েছে, হামলাটি দুই থেকে তিন জন জঙ্গি একসঙ্গে চালায়, যারা বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এটি গত কয়েক বছরের মধ্যে সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্য করে হওয়া সবচেয়ে মারাত্মক হামলা বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই ঘটনা ফের একবার কাশ্মীরের বাস্তব পরিস্থিতিকে সামনে এনে দিল, যেখানে সরকারের ২০১৯ সালের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করে “স্বাভাবিকতা” ফিরিয়ে আনার দাবি এখন প্রশ্নের মুখে।

Facebook Comments Box
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply