কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পাহেলগামে মঙ্গলবার সংঘটিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষ নিহত হওয়ার পর, গোটা উপত্যকায় ব্যাপক নিরাপত্তা অভিযান শুরু করেছে সেনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই হামলার জবাবে কাশ্মীরজুড়ে ১৫০০-র বেশি ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে রয়েছে সন্দেহভাজন ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার, জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে এমন ব্যক্তি এবং যাদের বিরুদ্ধে আগেই এফআইআর দায়ের ছিল। বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান জুড়ে চলছে তল্লাশি ও এলাকা ঘিরে ফেলার কাজ। যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করছে ভারতীয় সেনাবাহিনী, সিআরপিএফ এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। উপত্যকার সর্বত্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহুগুণে জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং ভবিষ্যতে এমন হামলা ঠেকাতে লক্ষাধিক নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে গতি আনতে অনন্তনাগ পুলিশ ঘোষণা করেছে, হামলার সঙ্গে জড়িতদের ধরিয়ে দিতে সাহায্যকারী সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদানকারীদের ₹২০ লক্ষ টাকার পুরস্কার দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF) নামক একটি জঙ্গি সংগঠন, যারা জম্মু ও কাশ্মীরে কথিত জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের কথা বলছে। TRF-কে লস্কর-ই-তইবা-র প্রক্সি সংগঠন বলে মনে করা হয় এবং এটি ২০১৯ সালে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর থেকে অনলাইনে সক্রিয় হতে শুরু করে। অল্প সময়ের মধ্যেই সংগঠনটি তাদের কার্যক্রম ও প্রভাব বিস্তার করে একাধিক হামলার মাধ্যমে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ভারত সরকার TRF-কে বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইন UAPA-এর অধীনে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে। অভিযান আরও জোরদার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। তাদের কথায়, দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে এবং উপত্যকায় শান্তি পুনরুদ্ধারে কোনো কসুর রাখা হবে না ।

Facebook Comments Box
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply