ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকার নেদারল্যান্ড থেকে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে পালঘাম হামলার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের প্রতিক্রিয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলিতে তাঁর ‘নির্বিকার’ উত্তর ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র সরকারকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন।
🔴 মার্কিন ভূমিকা নিয়ে ধোঁয়াশা
সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্করকে যখন প্রশ্ন করা হয়, “এই হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কী ছিল?” তিনি হালকা ব্যঙ্গ করে বলেন,
“আমেরিকা তখন আমেরিকাতেই ছিল।”
তিনি জানান, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে তিনি স্পষ্ট করেন যে, পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত ভারত একাই নিয়েছে, বাইরের কোনো মধ্যস্থতা ছাড়াই।
তবে, পালঘাম হামলায় জড়িত জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা—এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন উঠলে জয়শঙ্কর কোনো উত্তর দেননি।
🗣️ রাহুল গান্ধীর তীব্র সমালোচনা
রাহুল গান্ধী এই সাক্ষাৎকারের ভিডিও এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ পোস্ট করে লেখেন,
“জবাব চাই—কে ট্রাম্পকে মধ্যস্থতার অনুরোধ করেছিল?”
তিনি আরও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন:
- কেন ভারতের নাম পাকিস্তানের সঙ্গে একসাথে বলা হচ্ছে?
- কেন একটিও দেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নিন্দা জানায়নি?
- কে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ‘মধ্যস্থতা’ করার কথা বলেছিল?
📌 বিরোধীদের প্রশ্ন: কূটনৈতিক ব্যর্থতা?
যদিও বিরোধীরা অপারেশন সিন্দুর-এর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে, তারা মনে করছে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান দুর্বল। রাহুল গান্ধী বলেন,
“যখন পাকিস্তানকে সন্ত্রাসের জন্য দোষারোপ করা হচ্ছে, তখন একটিও দেশ আমাদের পাশে দাঁড়াচ্ছে না—এটা কি কূটনৈতিক ব্যর্থতা নয়?”
🌐 আন্তর্জাতিক প্রচার শুরু কেন্দ্রের
এদিকে কেন্দ্র সরকার ঘোষণা করেছে, একটি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল গঠিত হয়েছে, যারা ৩২টি দেশে গিয়ে পাকিস্তানের সন্ত্রাসে মদতের প্রমাণ পেশ করবে। প্রতিনিধি দলে থাকবেন ৫৯ জন সংসদ সদস্য।
📣 বিশ্লেষকদের মত
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অপারেশন সিন্দুরের সাফল্য তুলে ধরতে সচেষ্ট হলেও, জয়শঙ্করের কৌশলী নীরবতা এবং মার্কিন হস্তক্ষেপ ঘিরে থাকা অনিশ্চয়তা রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন তুলেছে। অনেকেই মনে করছেন, এই মুহূর্তে ভারতের কূটনৈতিক জবাবদিহি আরও শক্ত হওয়া উচিত।