সুপ্রিম কোর্ট গুয়াহাটি হাইকোর্টের এক আদেশ খারিজ করে দিয়েছে, যেখানে আসামের বিদেশি ট্রাইব্যুনালের মামলার কার্যক্রম বন্ধ করার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। শীর্ষ আদালত রায়ে জানিয়েছে, ওই মামলাটি ‘রেস জুডিকাটা’-এর আওতায় পড়ে, কারণ অভিযুক্ত তারাভানু খাতুনকে আগেই এক মামলায় ভারতীয় বলে ঘোষণা করা হয়েছিল।

শীর্ষ আদালত পর্যবেক্ষণ করেছে, “বিদেশি ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম আইনপ্রক্রিয়ার অপব্যবহার ছাড়া আর কিছু নয়,” এবং স্পষ্ট করেছে, যতক্ষণ না আগের রায় বহাল থাকে, ততক্ষণ একই বিষয়ে নতুন মামলা শুরু করা যায় না।

২০১৬ সালে তারাভানু খাতুনের বিরুদ্ধে ২৫ মার্চ ১৯৭১-এর পর অসমে প্রবেশের অভিযোগে বিদেশি আইন, ১৯৪৬-এর আওতায় মামলা শুরু হয়। তবে নলবাড়ি (মুকালমুয়া) বিদেশি ট্রাইব্যুনাল ৩১ আগস্ট ২০১৬ সালের চূড়ান্ত রায়ে জানায়, তিনি বিদেশি নন। ট্রাইব্যুনাল জানায়, রাজ্যপক্ষ কোনো সাক্ষী হাজির করতে পারেনি, আর খাতুনের দাখিল করা দলিলপত্র ও মৌখিক সাক্ষ্য (যেমন ১৯৭১-এর আগে ভোটার তালিকায় তার বাবা-মায়ের নাম এবং ১৯৮৫ থেকে তার ভোটার রেকর্ড) যথেষ্ট প্রমাণ হিসেবে গৃহীত হয়েছে।

তবু, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮-তে তার বিরুদ্ধে আবার নোটিস জারি হয় এবং নতুন মামলা রুজু হয়। তিনি এই দ্বিতীয় মামলার বিরুদ্ধে গুয়াহাটি হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন। হাইকোর্ট যদিও আগের ঘোষণার কথা স্বীকার করে, তবে পিটিশন খারিজ করে দিয়ে জানান যে তিনি নতুন মামলায় ট্রাইব্যুনালের সামনে তার বক্তব্য রাখতে পারেন।

এরপর খাতুন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।

সিনিয়র অ্যাডভোকেট পি ভি সুরেন্দ্রনাথ, খাতুনের পক্ষে যুক্তি দেন যে, আগের মামলার রায় চূড়ান্ত এবং তা বহাল থাকা অবস্থায় একই ভিত্তিতে নতুন মামলা শুরু করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। রাজ্যের পক্ষে অ্যাডভোকেট দেবজ্যোতি বরকটাকি বলেন, আগের ট্রাইব্যুনালের রায় সংক্ষিপ্ত ছিল এবং সঠিকভাবে প্রমাণ বিশ্লেষণ করা হয়নি, তাই তা বাধ্যতামূলক নয়।

সুপ্রিম কোর্ট এই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, রাজ্যের একমাত্র আইনি পথ ছিল আগের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা বা তা বাতিলের আবেদন করা। কোনো পুনর্বিবেচনার ব্যবস্থা না থাকায়, একই বিষয়ে দ্বিতীয় মামলা করা অবৈধ।

শীর্ষ আদালত জানায়, ২০১৮ সালের মামলা আইনপ্রক্রিয়ার অপব্যবহার, এবং তা খারিজ করে হাইকোর্টের ৩১ মে ২০২৩ সালের আদেশ আংশিকভাবে বাতিল করে দেয়।

রায়ে বলা হয়েছে, ‘‘৩১ মে ২০২৩ তারিখের হাইকোর্টের আদেশ, যেখানে পরবর্তী মামলাটি বাতিল না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তা বাতিল করা হচ্ছে।’’


Facebook Comments Box
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply