ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমাতে মধ্যস্থতার চেষ্টায় সৌদি আরব

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে, মধ্যস্থতার জন্য এগিয়ে এসেছে সৌদি আরব। শনিবার সকালে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, রাজ্যের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আদেল আল-জুবেইর ৮ ও ৯ মে ভারত ও পাকিস্তান সফর করেছেন, যাতে শত্রুতা কমিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া যায়।

সৌদি নেতৃত্বের নির্দেশে আল-জুবেইরের এই মিশনের উদ্দেশ্য ছিল “উত্তেজনা প্রশমিত করা, বর্তমান সামরিক সংঘর্ষ বন্ধ করা এবং সব ধরনের বিরোধ আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো।” এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা এমন সময়ে এসেছে যখন অঞ্চলটিতে সাম্প্রতিক বছরগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সীমান্ত উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

ভারতের ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ বা সুনির্দিষ্ট হামলার পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। বুধবার ভোরে ভারত পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (পিওকে)-এর সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালায়, যা ২২ এপ্রিল পাহেলগামে হওয়া সন্ত্রাসী হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে চালানো হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার, আল-জুবেইর নয়াদিল্লিতে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ভারতের হামলার পরবর্তী আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। পরদিন তিনি ইসলামাবাদে পাকিস্তানের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন, যা রিয়াদের উভয় পক্ষের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করে।

সৌদি উদ্যোগটি এমন সময় ঘোষণা করা হয় যখন পাকিস্তান ভারতকে তিনটি প্রধান বিমানঘাঁটি — নূর খান (রাওয়ালপিন্ডি), মুরিদ (চকওয়াল), এবং রফিকি (শোরকোট)-তে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার অভিযোগ তোলে। শনিবার ভোর ৪টায় পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমদ শরীফ চৌধুরী এক প্রেস কনফারেন্সে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর কিছুক্ষণ পর, পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি চ্যানেল পিটিভি জানায় যে পাকিস্তান “বুনিয়ান আল-মারসুস” (আয়রন ওয়াল) নামে প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযান দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে সামরিক সংঘর্ষের ক্ষেত্রে বড় মাত্রার বৃদ্ধি নির্দেশ করে।

শুক্রবার রাতে পাকিস্তান থেকে ভারতের বিভিন্ন স্থানে — জম্মু ও কাশ্মীর থেকে গুজরাট পর্যন্ত — প্রায় ২৬টি ড্রোন হামলার খবর এসেছে। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা একাধিক হুমকি সফলভাবে প্রতিহত করেছে এবং বিমানঘাঁটি ও বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো রক্ষা করতে পেরেছে।

পরিস্থিতি এখনও অস্থির, এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা টানটান নজর রাখছেন।

Facebook Comments Box
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply