গুজরাটের সংখ্যালঘু সমন্বয় কমিটি (MCC) রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত ইউনিফর্ম সিভিল কোড (UCC)-এর বিরুদ্ধে ব্যাপক গণআন্দোলন শুরু করেছে। সংস্থাটি এই আইনকে সংবিধানবিরোধী এবং ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করেছে।

গণসমর্থন সংগ্রহের জন্য MCC একটি বিশেষ প্রচার চালাচ্ছে, যেখানে জনগণ মিসড কল ও কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমে আইনটির প্রতি তাদের বিরোধিতা জানাতে পারবে। এই আন্দোলন গুজরাটজুড়ে ব্যাপকভাবে পরিচালিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন MCC-এর মুখপাত্র মুজাহিদ নাফিস।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে নাফিস বলেন, “ভারতের নাগরিক হিসেবে আমি সংবিধান দ্বারা প্রদত্ত মৌলিক অধিকারগুলোর প্রতি সম্পূর্ণ আস্থাশীল। এখানে ধর্ম ও প্রথা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত পারিবারিক আইনগুলো সুস্পষ্টভাবে সুরক্ষিত রয়েছে। আমি এগুলো পরিবর্তনের যে কোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিচ্ছি।”

নাফিস প্রশ্ন তুলেছেন, গুজরাটে ইতোমধ্যেই ২০০৬ সালের গুজরাট রেজিস্ট্রেশন অব ম্যারেজ অ্যাক্ট কার্যকর রয়েছে, যা বিয়ের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করেছে। তাহলে নতুন করে UCC প্রয়োজন কেন? এছাড়া, তালাকের নিবন্ধন ও রক্ষণাবেক্ষণের দাবির জন্য নতুন আইন আনার কোনো যৌক্তিকতা নেই, কারণ বিদ্যমান গৃহহিংসা প্রতিরোধ আইন এবং ফৌজদারি কার্যবিধির (CrPC) ১২৫ ধারা এই বিষয়গুলো ইতোমধ্যেই কভার করে।

নারীদের অধিকার প্রসঙ্গে নাফিস বলেন, ইসলাম বহু আগেই নারীদের সম্পত্তির অধিকার দিয়েছে, যেখানে হিন্দু আইনে নারীদের সম্পত্তির অধিকার অনেক পরে এসেছে। তিনি দাবি করেন, UCC নতুন কোনো সমাধান আনবে না, বরং সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধ বাড়িয়ে দেবে।

তিনি আরও বলেন, “UCC সংবিধানের ২৫, ২৬, ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদের সরাসরি লঙ্ঘন, যা প্রত্যেক নাগরিকের নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে।” নাফিসের মতে, UCC চালুর ফলে আইনি জটিলতা বাড়বে এবং মানুষের জন্য এটি আরও অকার্যকর প্রক্রিয়ায় পরিণত হবে, যার প্রমাণ ইতিমধ্যে উত্তরাখণ্ডে দেখা গেছে।

সংখ্যালঘু সমন্বয় কমিটি (MCC) তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেছে যে তারা UCC-এর বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন চালিয়ে যাবে এবং এর অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানাবে। গুজরাটজুড়ে লাখ লাখ মানুষকে সচেতন করতে MCC প্রচার চালাচ্ছে এবং সকলকে এই আইনবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।

Facebook Comments Box
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply