উত্তর প্রদেশের উন্নাও জেলায় হোলির দিন একজন মুসলিম ব্যক্তিকে নির্মমভাবে মারধর করে হত্যা করেছে একদল হিন্দু উগ্রপন্থী। নিহত ব্যক্তি ৪৮ বছর বয়সী শরীফ, যিনি স্থানীয় কাসিম নগর রাব্বান্না মসজিদের কাছাকাছি বসবাস করতেন।

শনিবার (৯ মার্চ), শরীফ যখন তার মোহল্লা কাঞ্জি এলাকার পৈতৃক বাড়ি থেকে মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি মোহল্লা কাশিফ আলী সরাই চুঙ্গি পাওয়ার হাউসের কাছে হোলি উদযাপনকারী একদল লোকের সামনে পড়েন।

তারা শরীফের ওপর জোর করে রঙ ছুঁড়ে মারতে থাকে। শরীফ এর প্রতিবাদ করলে তারা বারবার একই কাজ করে এবং তর্ক শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে এই তর্ক হিংসাত্মক আকার ধারণ করে এবং তাঁকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়

পাশাপাশি থাকা লোকজন কোনোভাবে শরীফকে উদ্ধার করে এবং একটি মাচায় বসিয়ে পানি পান করান। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান এবং মৃত্যুবরণ করেন

  • ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি করে, যার ফলে পুলিশের বিপুল উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়
  • র‍্যাপিড রেসপন্স টিমসহ বিভিন্ন থানার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
  • ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসেন এবং অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান
  • সিটি CO সোনম সিং ও সহর কাজীর সাথে আলোচনা করেও উত্তেজনা প্রশমিত করা সম্ভব হয়নি

উন্নাও পুলিশ সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া বিবৃতিতে জানিয়েছে—

“কোতয়ালি সদর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছে, যা ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ময়নাতদন্তে শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি এবং মৃত্যুর কারণ হৃদরোগজনিত (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট) বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে, আমরা অন্যান্য দিক থেকে বিষয়টি তদন্ত করছি।”

তবে, প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, শরীফকে নির্দয়ভাবে মারধর করা হয়েছিল এবং তাঁর মৃত্যু শুধুমাত্র কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের কারণে হয়েছে—এমন দাবি অবিশ্বাস্য

এই ঘটনার পর উন্নাও জুড়ে আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। হোলির মতো উৎসবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জোরপূর্বক জড়িত করার প্রবণতা এবং এর ফলে হিংসার ঘটনা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

স্থানীয় জনগণ দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছে। তবে, পুলিশের ব্যাখ্যা ও তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে

Facebook Comments Box
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply