উত্তরাখণ্ডের নৈনিতালে সম্প্রতি এক মুসলিম ব্যক্তিকে হিন্দু নাবালিকা কিশোরীর উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার করার পর এলাকায় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এর জেরে মুসলিম সম্প্রদায়ের দোকান ও এক মসজিদে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জানা গেছে, ১২ এপ্রিল নৈনিতালে এক নাবালিকার পরিবার ৬৫ বছর বয়সি ঠিকাদার উসমানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে। পকসো আইনে (POCSO Act) মামলা রুজু করে পুলিশ বুধবার তাকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা বাজার এলাকায় জড়ো হয়ে অভিযুক্তের অফিস সংলগ্ন মুসলিম সম্প্রদায়ের দোকান ও খাবারের দোকানগুলিতে ভাঙচুর চালায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু লোক দোকানের কর্মচারীদের চড়-থাপ্পড় মারছে। পরে ওই জনতা স্থানীয় একটি মসজিদের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে পাথর ছোঁড়ে এবং থানার সামনেও অবস্থান বিক্ষোভ করে। পরদিন বৃহস্পতিবারও উত্তেজনা বজায় থাকে। রাস্তায় নেমে স্লোগান দেয় মানুষজন, বন্ধ থাকে অধিকাংশ স্কুল, কলেজ ও বাজার।
এ ঘটনায় নৈনিতালের আঞ্জুমান ইসলামিয়া কমিটি কড়া নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলে, ‘‘আমরা এই ন্যাক্কারজনক অপরাধের তীব্র নিন্দা করছি। নির্যাতিত কিশোরীর পাশে আছি এবং দোষীর কঠোরতম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি, যারা মসজিদে হামলা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’’
প্রশাসনের তরফে এসএসপি প্রহ্লাদ মীনা এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে এবং আমরা নিশ্চিত করব, এমন জঘন্য অপরাধের পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তার জন্য অভিযুক্তকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।’’ এছাড়াও, নিরাপত্তার জন্য এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সিটি এসপি জগদীশ চন্দ্র জানিয়েছেন, মসজিদ, দুই সম্প্রদায়ের বাসস্থান এবং বাজার এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।