জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলার কালিবাড়ি চকে বিজেপি-র এক বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠল দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। নিহত ২৬ জনের স্মরণে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলাতেই এই হামলা বলে অভিযোগ। আক্রান্ত সাংবাদিক রাকেশ শর্মা দৈনিক জাগরণ-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ঘটনাটি ঘটে বিজেপির নেতৃত্বে হওয়া এক প্রতিবাদ সভায়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন দলের বিধায়ক দেবীন্দর মনিয়াল, রাজীব যসরোতিয়া এবং ভারত ভূষণ। প্রতিবাদ কভার করতে এসে রাকেশ শর্মা প্রশ্ন তোলেন, “পহেলগামে এই ভয়াবহ হামলার জন্য দায়ী কে? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কি জবাবদার নয়?” যদিও দেবীন্দর মনিয়াল শান্তভাবে উত্তর দেন, তবে সেই প্রশ্নের পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ। উপস্থিত বিজেপি কর্মী হিমাংশু শর্মা সাংবাদিককে “বিচ্ছিন্নতাবাদী ভাষা” ব্যবহারের অভিযোগে তিরস্কার করেন। পরিস্থিতি তখন আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সাংবাদিকদের একটি দল এই মন্তব্যের প্রতিবাদ করে অনুষ্ঠান থেকে বয়কট করে বেরিয়ে যেতে থাকলে, হিমাংশু শর্মা, রবিশঙ্কর সিং, অশ্বিনী শর্মা, মনজিৎ সিং, টোনি ও প্রবীণ চুনার নেতৃত্বে একদল বিজেপি কর্মী রাকেশ শর্মার উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত সাংবাদিক রাকেশ শর্মাকে কাঠুয়া সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো হয়। তাকে হাসপাতালে পৌঁছে দেন পুলিশ উপাধীক্ষক (DSP) রবীন্দর সিং। ঘটনার নিন্দায় মুখর হয়েছে সংবাদমাধ্যম মহল। কাঠুয়ার জেলাশাসক (SSP) শোভিত সাক্সেনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধি দল। তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে FIR দায়ের ও গ্রেফতারের দাবি জানান। প্রতিবাদে কালো ব্যাজ পরে বিক্ষোভ দেখান সাংবাদিকরা। ঘোষণা করা হয়, যতদিন না ন্যায় বিচার হয়, ততদিন বিজেপির সব অনুষ্ঠান বয়কট করবেন সাংবাদিকেরা। একইসঙ্গে জম্মু প্রেস ক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের প্রতিবাদ কর্মসূচিও অনুষ্ঠিত হয়। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি (PCC)। দলের মুখপাত্র রবিশর্মা বলেন, “একজন জাতীয় দৈনিকে কর্মরত সাংবাদিক শুধু নিজের কর্তব্য পালন করতে গিয়েই আক্রান্ত হচ্ছেন। আজকের ভারতে প্রশ্ন করা যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে।” এই হামলার ঘটনাকে ঘিরে কাশ্মীর উপত্যকায় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ আরও ঘনীভূত হয়েছে।
Facebook Comments Box
Tags: Last updated on April 24, 2025