বারাণসী/প্রয়াগরাজ | ৩০ মে ২০২৫: এলাহাবাদ হাইকোর্ট বারাণসীর ঐতিহাসিক ডাল মান্ডি এলাকার উচ্ছেদ পরিকল্পনার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। কাশী বিশ্বনাথ করিডোর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রোড প্রশস্তকরণের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই এলাকায় গৃহ ও দোকান ভাঙার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। আদালতের এই রায় ডাল মান্ডির হাজারো বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীর জন্য তাৎপর্যপূর্ণ স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে।
প্রধানত মুসলিম ব্যবসায়ীদের দ্বারা পরিচালিত ডাল মান্ডি বাজারে প্রায় ১০,০০০ দোকান রয়েছে। সংকীর্ণ গলিপথ ও ঘনবসতির এই এলাকায় রোড প্রশস্তকরণ প্রকল্পের ফলে বড় মাত্রায় উচ্ছেদ ও জীবিকা হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। জমি অধিগ্রহণ ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ছাড়াই উচ্ছেদের অভিযোগ ঘিরে ক্ষোভ দেখা দেয়।
এই প্রেক্ষিতে ইনামউদ্দিন আহমদ বনাম উত্তরপ্রদেশ রাজ্য ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে (WRIT – C No. 17290 of 2025) একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটিতে দাবি করা হয়, পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (PWD)-এর কর্মকর্তারা কোনোরকম নোটিস বা আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকানদারদের উপর চাপ সৃষ্টি করছিলেন জায়গা খালি করার জন্য।
আদালতে আবেদনের পক্ষে অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অফ সিভিল রাইটস (APCR)-এর পক্ষ থেকে বিশিষ্ট আইনজীবী সৈয়দ ফারমান আহমদ নকভি, জাহির আসগর এবং সৈয়দ আহমদ ফয়জান সওয়াল করেন।
আদালতের শুনানিতে রাজ্য সরকার আশ্বাস দেয় যে, উপযুক্ত আইনি প্রক্রিয়া ও ক্ষতিপূরণ ছাড়া কাউকে উচ্ছেদ বা ভাঙচুর করা হবে না। বিচারপতি সলীল কুমার রায় এবং বিচারপতি অরুণ কুমার সিং দেশওয়াল-এর ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি নিষ্পত্তি করে দেন এবং স্থানীয়দের স্বার্থ রক্ষার নির্দেশ দেন।
এই অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ ডাল মান্ডির বাসিন্দাদের জন্য বড় ধরনের আইনি জয় হিসেবে ধরা হচ্ছে। এতে প্রাথমিকভাবে জোরপূর্বক উচ্ছেদের হাত থেকে তারা রক্ষা পেলেন এবং আইনি মালিকানা ও ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মহলের একাংশ বলছে, “আমরা উন্নয়নের বিরোধী নই, কিন্তু আমাদের জীবিকা ও সংস্কৃতির বিনাশ করে নয়। এই রায় আমাদের লড়াইয়ে আশার আলো।”
এই মামলা উত্তরপ্রদেশের উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে মানবাধিকার, আইনি প্রক্রিয়া ও প্রান্তিক সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার প্রাসঙ্গিকতা নতুন করে সামনে এনেছে।