নীল বাতির গাড়িতে ঘুরে কখনও আইএএস অফিসার, কখনও অন্য কোনও পরিচয়ে দেদার তোলাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর আপ্ত সহায়ক প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিত। মঙ্গলবার হলদিয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও অধীররঞ্জন চৌধুরীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, বিজেপির বেশ কয়েকজন দাপুটে নেতার সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল প্রদীপ্তের।

কে এই প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিত?

ধৃত প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিত দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর আপ্ত সহায়ক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন এবং মূলত দিল্লিতেই থাকতেন। তাঁর আসল বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার সুতাহাটা থানার চৈতন্যপুরে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রদীপ্ত রাজনীতির বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে নিজের পরিচিতি ও ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছিলেন।

নীল বাতির গাড়ি, ভুয়ো পরিচয়, তোলাবাজি!

অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই প্রদীপ্ত নীল বাতি লাগানো গাড়ি ব্যবহার করতেন এবং নিজেকে কখনও আইএএস অফিসার, কখনও উচ্চপদস্থ আমলা বলে পরিচয় দিতেন। এই প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় তোলাবাজি চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। পুলিশের কাছে এমন একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। অবশেষে তদন্তে নেমে হলদিয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রাজনৈতিক সম্পর্ক ও তার ফায়দা তোলার চেষ্টা

সম্প্রতি চৈতন্যপুরে আয়োজিত এক ফুটবল টুর্নামেন্টে প্রদীপ্তকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পাশেই দেখা গিয়েছিল। এছাড়া, তাঁর গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। এই ঘটনাগুলি ইঙ্গিত দেয় যে প্রদীপ্ত সবসময় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের সংস্পর্শে থাকার চেষ্টা করতেন এবং নিজের স্বার্থসিদ্ধি করতে চাইতেন। তবে শেষ পর্যন্ত তার চালবাজি ধরা পড়ে গেল এবং পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন তিনি।

রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়া

প্রদীপ্ত রাজপণ্ডিতের গ্রেপ্তারের পর রাজনৈতিক মহলে তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে। বিশেষত, কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীর আপ্ত সহায়ক হওয়ায় বিষয়টি আরও বিতর্কিত হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি, বিজেপির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে।

এখন দেখার, এই ঘটনায় কংগ্রেস ও বিজেপির পক্ষ থেকে কী প্রতিক্রিয়া আসে এবং পুলিশি তদন্ত কোন দিকে মোড় নেয়।

Facebook Comments Box
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply