ছত্তিশগড়ের বিভিন্ন স্থানে সোমবার (১১ মার্চ) অভিযান চালিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল ও তার ছেলে চৈতন্য বাঘেলের বাসভবনেও তল্লাশি চালানো হয়।
এই অভিযান কংগ্রেস সরকারের শাসনামলে সংঘটিত বহুল আলোচিত বহু-কোটি টাকার মদ কেলেঙ্কারির তদন্তের অংশ বলে জানিয়েছে ইডি।
সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, দুর্গ জেলায় মোট ১৪টি স্থানে তল্লাশি চালানো হয়েছে, যার মধ্যে চৈতন্য বাঘেল ও তার ঘনিষ্ঠদের সম্পত্তিও রয়েছে। তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন, অবৈধ মদ ব্যবসা থেকে আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন চৈতন্য বাঘেল।
ইডির দাবি, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ছত্তিশগড়ে কংগ্রেস সরকারের আমলে রাজ্যের মদ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত জালিয়াতি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ২,১৬১ কোটি রুপি আত্মসাৎ করা হয়েছে। তদন্তকারীদের অভিযোগ, মদের সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কমিশন নেওয়া হতো এবং সরকারি দোকানগুলোর মাধ্যমে অনিবন্ধিত মদ বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, যার ফলে রাজ্যের রাজস্ব খাতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ইডি এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট কেস ইনফরমেশন রিপোর্ট (ECIR) দায়ের করে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন রায়পুরের মেয়র আইজাজ ধেবারের বড় ভাই আনোয়ার ধেবার, প্রাক্তন আইএএস কর্মকর্তা অনিল তুতেজা ও আইটিএস অফিসার অরুণ পতি ত্রিপাঠি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রাক্তন আবগারি মন্ত্রী কাওয়াসি লাখমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ইডির অভিযোগ, তিনি ৭২ কোটি রুপি গ্রহণ করেছেন, যার একটি অংশ কংগ্রেসের কার্যালয় নির্মাণ ও তার ছেলের বাড়ি তৈরিতে ব্যয় করা হয়েছে।
তল্লাশি অভিযান শুরু হতেই ভূপেশ বাঘেলের দপ্তর এক বিবৃতিতে ইডির পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “গত সাত বছর ধরে চলা মিথ্যা মামলা আদালতে খারিজ হয়ে যাওয়ার পর, আজ সকালে ইডির ‘অতিথিরা’ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ভূপেশ বাঘেলের ভিলাইয়ের বাসভবনে প্রবেশ করেছেন। কেউ যদি এই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পাঞ্জাবে কংগ্রেসকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করে, তাহলে তারা ভুল করছে।”
উল্লেখ্য, ভূপেশ বাঘেল সম্প্রতি কংগ্রেসের পাঞ্জাব শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এবং রাজ্যের রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। তার ঘনিষ্ঠ মহল জানায়, তিনি ২০২৭ সালের নির্বাচন সামনে রেখে পাঞ্জাবের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন।
এদিকে, ইডির তদন্তে ইতোমধ্যেই বড় অঙ্কের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের প্রায় ২০৫ কোটি রুপির সম্পদ সংযুক্ত করা হয়েছে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের (PMLA) আওতায়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্ত এখনো শেষ হয়নি এবং নতুন তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ অব্যাহত রয়েছে।