চণ্ডীগড়: বুধবার চণ্ডীগড়ের দিকে এক সপ্তাহব্যাপী প্রতিবাদ মিছিলের জন্য এগোতে গিয়ে শত শত কৃষককে আটক করেছে পাঞ্জাব পুলিশ। এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছে সংযুক্ত কিসান মোর্চা (SKM) এবং ৩০টিরও বেশি কৃষক সংগঠন।
প্রশাসনের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা
প্রশাসন আগেভাগেই কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়, যার অংশ হিসেবে পাঞ্জাবজুড়ে ২৫টিরও বেশি স্থানে ব্যারিকেড বসানো হয়। পাঞ্জাব পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (DIG) এইচ.এস. ভুল্লর সংবাদ সংস্থা PTI-কে বলেন, “যেখানে কোনো কৃষক রাস্তায় নেমেছেন, সেখানেই পুলিশ তাদের আটকিয়েছে।”
মান্ন সরকার ও AAP-এর বিরুদ্ধে কৃষকদের বিক্ষোভ
পুলিশি বাধার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে কৃষকরা পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান এবং আম আদমি পার্টি (AAP) পরিচালিত রাজ্য সরকারের কুশপুতুল দাহ করেন।
আমৃতসর থেকে এক কৃষক নেতা দ্য হিন্দু-কে বলেন, “আমরা মান সরকারের কুশপুতুল পুড়িয়েছি, কারণ তারা আমাদের চণ্ডীগড়ে যেতে বাধা দিচ্ছে। AAP সরকার আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার দমন করছে। দিল্লিতে আমাদের প্রতিবাদ করতে দেওয়া হচ্ছে না, রাজ্যের রাজধানীতেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের ইশারায় কাজ করছেন।”
প্রধান দাবিগুলি কী?
কৃষকদের মূল দাবি হলো—
- ছয়টি ফসলের (বাসমতি চাল, ভুট্টা, মুগ ডাল, আলু ইত্যাদি) জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (MSP)-এর আইনি গ্যারান্টি।
- কেন্দ্র সরকারের প্রস্তাবিত ন্যাশনাল পলিসি ফ্রেমওয়ার্ক অন অ্যাগ্রিকালচারাল মার্কেটিং প্রত্যাখ্যান।
- এমএস স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা।
অগ্রিম আটক ও মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
মঙ্গলবার, বিক্ষোভের একদিন আগে, পুলিশ কয়েকজন SKM নেতাকে আটক করে এবং তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (Bharatiya Nagarik Suraksha Sanhita) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান কৃষকদের এই প্রতিবাদকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, “প্রতিদিন ‘রেল রোকো’, ‘সড়ক রোকো’ আন্দোলন করে পাঞ্জাবের বিশাল ক্ষতি হচ্ছে। রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, পাঞ্জাব যেন ধর্নার রাজ্যে পরিণত হয়েছে।”
দাবি মানতে নারাজ মান, কৃষকদের সঙ্গে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন
বিক্ষোভের আগের দিন, কৃষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে চণ্ডীগড়ের পাঞ্জাব ভবনে বৈঠক চলাকালীন কৃষক নেতারা যখন ১৮ দফা দাবি উপস্থাপন করেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী মান ক্ষুব্ধ হয়ে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান বলে জানা গেছে।
এই প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে কৃষক ও প্রশাসনের টানাপোড়েন তীব্রতর হচ্ছে, যা আগামী দিনগুলিতে আরও আন্দোলনের আভাস দিচ্ছে।