গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে অবশেষে অবস্থান পরিবর্তন করলেন আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, গাজা থেকে কাউকে উৎখাত করা হবে না। বুধবার (১২ মার্চ) হোয়াইট হাউসে আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিশেল মার্টিনের সঙ্গে বৈঠকের সময় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন।

ট্রাম্পের এই বক্তব্য তার আগের ঘোষণার সম্পূর্ণ বিপরীত। এর আগে তিনি গাজা দখলের পরামর্শ দিয়েছিলেন এবং ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে অঞ্চলটিকে মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা (পর্যটন কেন্দ্র) বানানোর কথা বলেছিলেন। গত মাসে গাজা দখলের পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেছিলেন, “গাজার প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দাকে স্থায়ীভাবে সরিয়ে নেওয়া হবে।”

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতির সময় ট্রাম্পের এই প্রস্তাব বিশ্বব্যাপী নিন্দার মুখে পড়ে। ফিলিস্তিনিরা দীর্ঘদিন ধরে আশঙ্কা প্রকাশ করে আসছিলেন যে, তাদের স্থায়ীভাবে বিতাড়িত করার ষড়যন্ত্র চলছে। ট্রাম্পের মন্তব্য সেই আশঙ্কাকে আরও উসকে দেয়।

ট্রাম্পের বিতর্কিত পরিকল্পনার পর আরব রাষ্ট্রগুলো হুঁশিয়ারি দেয় যে, এমন কোনো পদক্ষেপ পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। এরপরই মিসরের নেতৃত্বে আরব দেশগুলো গাজার পুনর্গঠনের জন্য ৫৩ বিলিয়ন ডলারের একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করে, যা ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুতির পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কাজ করবে।

ট্রাম্পের এই নরম অবস্থান কি কূটনৈতিক চাপে নেওয়া কৌশলগত পরিবর্তন, নাকি তিনি সত্যিই গাজার জনগণকে তাদের ভূমিতে থাকতে দেওয়ার পক্ষে? বিশ্লেষকদের মতে, এটি তার নির্বাচনী কৌশলের অংশ হতে পারে, কারণ আমেরিকায় ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে বিক্ষোভ এবং মুসলিম ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।

গাজা নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান পরিবর্তন হলেও, বাস্তব পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত। সামনের দিনগুলোতে দেখা যাবে, তার নতুন অবস্থান বাস্তবে কোনো পরিবর্তন আনতে পারে কি না।

Facebook Comments Box
Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply