নাদা আবদুল্লাহ আল-ঘামদি সৌদি আরবে ইতিহাস গড়লেন, তিনি মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদে অফিসিয়ালভাবে ফটোগ্রাফি করার লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রথম নারী হয়েছেন। এই কৃতিত্ব শুধু তার অসাধারণ প্রতিভার স্বীকৃতি নয়, বরং এটি সৌদি নারীদের ক্রমবর্ধমান সাফল্যের প্রতিফলনও।
আরবি সংবাদ চ্যানেল আল-এখবারিয়া এক ভিডিওতে ঘোষণা করেছে, “সৌদি নারীরা সবক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।” ভিডিওতে আল-ঘামদি তার আবেগ প্রকাশ করেন এবং জানান যে ছোটবেলা থেকেই তিনি গ্র্যান্ড মসজিদের ভেতরে ছবি তোলার স্বপ্ন দেখতেন। কঠোর বিধিনিষেধের কারণে এটি দীর্ঘদিন অসম্ভব ছিল, কিন্তু তিনি আশা ছাড়েননি এবং শেষ পর্যন্ত তার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে।
গ্র্যান্ড মসজিদের মিডিয়া সেন্টারে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে তিনি মসজিদের আধ্যাত্মিক সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক স্থাপত্য ফ্রেমবন্দি করেন। তার তোলা ছবি মসজিদের পবিত্র পরিবেশ ও উপাসকদের ইবাদতের মুহূর্ত বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করে।
ইনস্টাগ্রামে আল-ঘামদি লেখেন, “আল্লাহর অশেষ কৃপায় আমার অন্যতম লক্ষ্য ও স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আমি গ্র্যান্ড মসজিদের প্রথম নারী কর্মী এবং ফটোগ্রাফার হিসেবে নিরাপত্তা বিভাগের এভিয়েশনের সহায়তায় আকাশ থেকে মসজিদের ছবি তুলতে পেরেছি।”
গ্র্যান্ড মসজিদের বাইরেও আল-ঘামদি একজন স্বনামধন্য ফটোগ্রাফার হিসেবে পরিচিত, যিনি বিভিন্ন বড় ইভেন্ট ও প্রদর্শনীতে কাজ করেছেন। তিনি সৌদির বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেছেন, যেমন:
- সৌদি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়
- সাহিত্য, প্রকাশনা ও অনুবাদ বিষয়ক সাধারণ কর্তৃপক্ষ
- রেড সি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল
- পাবলিক সিকিউরিটি ও পবিত্র নগর পৌরসভা
দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে নারীদের কর্মসংস্থানে অংশগ্রহণ বিশ্বের অন্যতম সর্বনিম্ন ছিল। তবে, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ভিশন ২০৩০ উদ্যোগের আওতায় ব্যাপক সংস্কার চালানো হয়েছে, যার ফলে নারীরা গাড়ি চালানোর অনুমতি পেয়েছেন, স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে পারছেন এবং পুরুষ-প্রধান পেশায় কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
নাদা আবদুল্লাহ আল-ঘামদির এই সাফল্য সৌদি নারীদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে এবং নারীর ক্ষমতায়নে দেশটির পরিবর্তনের প্রতিফলন ঘটিয়েছে।