বল্লিয়া, উত্তরপ্রদেশ | ৩০ মে ২০২৫: উত্তরপ্রদেশের রাসর শহরের একটি বিবাহ সভাগৃহে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করায় এক দলিত পরিবারকে লাঠি ও রড দিয়ে আক্রমণ করেছে উচ্চবর্ণের একদল ব্যক্তি। হামলায় দু’জন গুরুতর জখম হয়েছেন। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
“দলিত হয়েও হল বুক করো কেন?” — হামলাকারীদের ঘৃণামূলক মন্তব্য
প্রথমিক তথ্য বিবরণী (FIR) অনুসারে, হামলাকারীরা চিৎকার করে বলে, “দলিত হয়েও কীভাবে হল ভাড়া নিয়ে বিয়ে করছো?” এই মন্তব্যের পরই তারা বিবাহ মণ্ডপে ঢুকে বেধড়ক মারধর শুরু করে।
২০ জনের গোষ্ঠী রাত ১০:৩০টার সময় হামলা চালায়
অভিযোগকারীর ভাই রঘবেন্দ্র গৌতম জানিয়েছেন, প্রায় ২০ জনের একটি দল, যাদের হাতে লাঠি ও রড ছিল, তারা রাত প্রায় ১০:৩০টার সময় স্বয়ংবর মেরেজ হল-এ ঢুকে পড়ে এবং উপস্থিতদের উপর আক্রমণ করে। হামলায় গৌতমের আত্মীয় অজয় কুমার ও মানন কান্ত গুরুতর আহত হন এবং বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নামজাদা হামলাকারীরা, মামলা রুজু হলেও গ্রেফতার নেই
পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলাকারী গোষ্ঠীর নেতৃত্ব দেন অমন সাহনি, দীপক সাহনি, রাহুল ও অখিলেশ, যাঁরা সকলেই মাল্লাহ টোলি এলাকা থেকে এসেছিলেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS)-এর প্রাসঙ্গিক ধারাগুলির পাশাপাশি অনুসূচিত জাতি ও উপজাতি (অত্যাচার প্রতিরোধ) আইন-এর অধীনেও মামলা রুজু করা হয়েছে।
বিচার ও সুরক্ষার দাবি
এই ঘটনার পর দলিত সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়েছে। সমাজকর্মীরা প্রশ্ন তুলছেন, “বিয়ের মতো এক সাধারণ সামাজিক অধিকার পালন করাও কি এখন দলিতদের অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে?” এখনো পর্যন্ত কোনো গ্রেফতার না হওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
এই ঘটনাটি স্পষ্ট করে দেয়, সমাজে জাতিগত বৈষম্য ও ঘৃণা কতটা গভীরে প্রোথিত, যেখানে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানও সহ্য করতে পারছে না কিছু উচ্চবর্ণের লোকজন। মানবাধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত বিচার ও অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে।